Master Filmmaker Andrei Tarkovsky

imhrauntor
20 Min Read

Master Filmmaker Andrei Tarkovsky

অঁদ্রে তারকোস্কি

(১৯৩২-১৯৮৬, সোভিয়েত রাশিয়ার চিত্রপরিচালক)। পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচালকদের একজন বলে স্বীকৃত এবং বার্গম্যানের মতে, বিরল স্বপ্নদ্রষ্টা ও কাব্যিক অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী রূপে ফেলিনি, বুনুয়েল ও কুরোশাওয়ার সঙ্গে তুলনীয়। মস্কোর এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে তাঁর জন্ম হয়, বাবা আর্সেনেই তারকোভস্কি ছিলেন কবি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ বছরগুলিতে অঁদ্রে ও তাঁর বোনের শৈশব কাটে ও স্কুলশিক্ষা ঘটে রাজধানী থেকে অনেক দূরে গ্রামাঞ্চলে। পরে এই পটভূমিকেই অঁদ্রে বেছে নেন তাঁর ইভান’স চাইল্ডহুড ছবির প্রেক্ষাপট হিশেবে। উচ্চতর বিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে তিনি ইনস্টিটিউট অব সিনেমাটোগ্রাফি থেকে স্নাতক হন (১৯৬১)। তিনি ছিলেন মিখাইল রমের বিখ্যাত স্টুডিওর সঙ্গে যুক্ত। ছাত্রাবস্থায় তাঁর প্রথম ছবি তৈরি করেই তিনি মনোযোগ আকৃষ্ট করেন। ছবিটি ছিল হেমিংওয়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি। তাঁর ডিপ্লোমাচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি, দ স্ত্রীমরোলার অ্যান্ড দ ভায়োলিন দেখেই বোঝা গেছিল একটি নতুন প্রতিভার ও এক বিশেষ প্রতিভার আবির্ভাব ঘটেছে। ইভান’স চাইল্ডহুড তাঁর যাত্রাপথে প্রথম বৃহৎ ও এক প্রধান পদক্ষেপ।

দশ বছর বয়সের একটি শিশুর যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে এই ছবি। তার প্রাপ্তমনস্কতা ও কর্তব্যবোধ, সাহস ও ঘৃণা, বীরত্ব ও উন্মাদনা এবং এর চিত্ররূপ ছিল এতই মৌলিক ও অভিঘাতী যে দর্শকের ওপর এর প্রভাব হয় অসামান্য। ছবিতে যুদ্ধকে দেখানো হয়েছিল উন্মত্ততা ও মনুষ্যত্বের বিনাশকারী হিশেবে। ছবিটি ৬২তে ভেনিসে সর্বোচ্চ পুরস্কার পায়। সাত্র বলেন, এই যুদ্ধচিত্রের শিশু-নায়ক ইভান যুদ্ধের মতোই উন্মত্ত। অন্যান্য যুদ্ধচিত্রের চেয়ে তারকোভস্কির এই ছবি এগিয়ে ছিল প্রখর কালচেতনায়।

এই ছবিতে এমন কিছু ভাবনা, গল্পাংশ ও উপাদানের দেখা মেলে যার পূর্ণতর পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর পরবর্তী ছবিগুলিতে। যেমন দ মিরর (৭৫)-য়ে। ছবিটিতে আছে এক তিক্ত সচেতনতা, একাধিক জোরালো আত্মজৈবনিক মোটিফ। কালচেতনার চেয়েও বেশি কিছু এই ছবির প্রাণ, ইতিহাসচেতনা।

World Master Filmmaker

ভবিষ্যৎকে অনুধাবন করার জন্যই অতীতকে বিশ্লেষণ করতে হয়। গ্রহণ করতে হয় ইতিহাস থেকে। ১৯৬৫তে প্রকাশিত হয় অন্দ্রেই রুবলেভ নামে একটি ঐতিহাসিক চিত্রনাট্য, যার অন্যতর চিত্রনাট্যকার তারকোভস্কি। ঐতিহাসিক এই কারণে যে একজন ঐতিহাসিক পুরুষ এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র। নয়তো একই সঙ্গে কাহিনিচিত্র, জীবনীচিত্র ও ঐতিহাসিক চিত্র-এ ছবির ঘরানা নির্দেশ করা কঠিন। একই সঙ্গে কাব্যিক, কল্পনাসমৃদ্ধ ও তাত্ত্বিক এই ছবির মধ্য দিয়ে তারকোস্কি চলচ্চিত্রকার হিশেবে তাঁর সামাজিক ও ঐতিহাসিক কর্তব্য পালন করেছেন। পনেরো শতকের (যখন রাশিয়া ছিল তাতার-মোঙ্গল শাসনাধীন) মহান দেওয়ালশিল্পী রুবলেভ ছিলেন ম্যুরালিস্টের চেয়ে বেশি, আইকন-পেন্টার, যাঁর ‘ট্রিনিটি’ জগদ্বিখ্যাত চিত্রসৃষ্টি। ছবিতে ক্যামেরা হল রুবলেভের চোখ, না তারও অধিক, রুবলেভের ভিশন। এ ছবি তাই দর্শন ও অনুভূতির বিভিন্নতা বিষয়েও। ছবিতে রুবলেভ ও থিয়োফেনস নামে একজন গ্রিক নিজ-নিজ শিল্প-সম্বন্ধীয় কথাবার্তার মাধ্যমে

দৃষ্টিভঙ্গি ও বোধশক্তির পার্থক্য প্রতিপাদন করেন। সাদা-কালোয় আলোকচিত্রিত এ ছবির শেষ দৃশ্যে রঙের ব্যবহার তাই শুধু দৃষ্টির নয়, বোধেরও, উত্তরণ ঘটায়। এ বোধ একই সঙ্গে নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও আধিবিদ্যক। এই গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক মূল্যের জন্যই তারকোস্কির ছবি একই সত্তায় সমসাময়িক ও চিরকালীন।

তাঁর মতে সিনেমার গুঢ় বৈশিষ্ট্য নিহিত তার কালচেতনায়। এই সময় হল তাঁর ভাষায়, ‘time expressed through facts’ বা ‘photographed time’, তাঁর নিজের ছবিগুলিই এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি ছিলেন একজন প্যাশনেট পোলারয়েড ফোটোগ্রাফার-ও।

তাঁর ছবির মোট সংখ্যা দশেরও কম, কিন্তু প্রতিটি ছবিই সত্য ও সুন্দরের উদ্দেশে শিল্পীর যাত্রাপথে এক-একটি মাইলস্টোন। সংকট, সমস্যা ও বিরোধের যুগে তারকোভস্কি বারবার সাম্য ও চারিত্রশক্তির জন্য প্রয়াস করেন, ফলে শিবত্বের জন্যও তাঁর আকুলতা রয়েছে।

সিনেমার লক্ষ্য ও আন্তর্জাতিক ভূমিকা সম্পর্কে তাঁর খুব স্পষ্ট ধারণা ছিল। তিনি সবসময়ে মনে করতেন আধুনিক মানুষের পক্ষে সিনেমা সেইরকম গুরুত্বপূর্ণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল ট্র্যাজেডি পুরাকালের ও উপন্যাস উনিশ শতকের শিক্ষিত মানুষের কাছে। চলচ্চিত্র তাঁর কাছে ছিল যতটা না পেশাদার কর্ম তার চাইতে বেশি নৈতিক কর্ম। শিল্প মানুষের কাছে জীবনের মুখোমুখি হবার জন্য একটা উপায়। আর শিল্পকর্ম হল সত্য সম্পর্কে শিল্পীর নিজস্ব ধারণার অন্তরঙ্গ প্রকাশ। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘My purpose is to make films that will help people to live, even if they sometimes cause unhappiness.”

‘He looks upon that planet/As if the starry sky/ls, an important object/Of his midnight concern’, পান্তেরনাকের কবিতার এই ক’টি পঙ্ক্তি দিয়ে তারকোস্কির দর্শনকে বর্ণনা করা যায়। যদিও তিনি সোলারিস (৭২) ও স্টকার (৮০)-র মতো কল্পবিজ্ঞানচিত্র নির্মাণ করেছেন, তবু এগুলি একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ও আধিবিদ্যকও বটে। এগুলির সময়কাল কোনো কাল্পনিক ভবিষ্যতে হলেও, এগুলি একই সঙ্গে ভীষণভাবে সমকালীনও, কেননা বর্তমান সময়ের অত্যন্ত জরুরি ও তীক্ষ্ণ কিছু নৈতিক সমস্যা নিয়ে এরা কথা বলেছে। অস্ত্রেই রুবলেভের মতো এই দুই ছবিও মানবজীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের চিরন্তন দার্শনিক জিজ্ঞাসার অপরিহার্য অংশ।

বাস্তব ও বাস্তবাতীতের, লিরিকাল ও এপিকের, বিশ্বজগৎ ও মনোজগতের মিলন ও সমন্বয়ে তারকোভস্কির চিত্রলোক এক অপূর্ব ও অসামান্য জগৎ-যার মর্ম ও তাৎপর্য সঠিক উপলব্ধি করা তৎকালীন সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের পক্ষে সহজ ছিল না। তাঁর বহু নতুন ছবির প্রস্তাব কর্তৃপক্ষ একের পর এক বাতিল করেন (এর মধ্যে ছিল দস্তয়েভস্কির দ ‘ইডিয়ট উপন্যাসের তারকোস্কি- কৃত সম্পূর্ণ প্রথা-বিরোধী এক চিত্রনাট্য)। একটি ছবি থেকে আরেকটি ছবির মধ্যে দীর্ঘ বিরতি তারকোভস্কির আবেগপ্রবণ, অন্তর্মুখী ও সংরক্ত মানসিকতার পক্ষে ছিল খুবই ক্ষতিকর।

তাঁর শেষ দুটি ছবি নস্টালজিয়া (৮৩) যার নায়ক এক আধুনিক সন্ত ও দ স্যাক্রিফাইস (৮৬) যার নায়ক এক ক্রান্তদর্শী লেখক, বিদেশে তোলা। কিন্তু এই ছবি দুটিও তাঁর পূর্ববর্তী ছবিগুলির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, তাঁর বিবর্তনের পথে স্বাভাবিক অগ্রগতি।

কিন্তু পাশ্চাত্য চলচ্চিত্র জগৎও তাঁর কাজের পক্ষে যথোপযুক্ত ছিল না। তাঁর বিপ্লবাত্মক ভাবনাচিন্তা কাছে ছিল দুষ্পাচ্য। আসলে মাধ্যমগত, বৃত্তিগত এবং রাজনৈতিক কোনো মাপকাঠি দিয়েই এই কিংবদন্তীসুলভ প্রতিভাকে মাপা যায় না। তাঁর তুলনা তিনি নিজে। যে কথা তাঁর অকালমৃত্যু সম্পর্কেও প্রযোজ্য। ফুসফুসের ভয়ংকর ক্যান্সারে তাঁর মৃত্যু হয়, আসন্ন যে

মৃত্যুর কথা বারবার এসেছে তাঁর শেষ দুটি ছবিতে।

বেঁচে থাকলে ১৯৮৭-র ৪ঠা এপ্রিল তাঁর বয়স হত ৫৫। ওই দিন মস্কোয় ফিল্ম-মেকার্স’ ক্লাব তাঁর সমস্ত ছবির দশদিন ব্যাপী একটি রেট্রোস্পেকটিভ শেষ করে। দেশবাসী সেই প্রথম উপলব্ধি করে তারকোভস্কির ‘চিত্রায়িত কাল’ বা শাশ্বত কালের অপূর্ব ও অসামান্য জগৎটিকে।

এইভাবে, একদিক দিয়ে দেখলে, কালসচেতন তারকোভস্কি (তাঁর রচিত গ্রন্থের নামকরণের মধ্য দিয়েও এই চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে) কালকে অতিক্রম করে চলে যান।

এক নজরে সিনেমা গুলো দেখে নিন

বছরনামইংরেজি নামপ্রকৃত নামদেশদৈর্ঘ্যমন্তব্য
১৯৫৬“দ্যা কিলারস”The KillersУбийцыসোভিয়েত ইউনিয়ন১৯ মিনিটছাত্র থাকাকালীন
১৯৫৯দেয়ার উইল বি নো লিভ টুদেThere Will be No Leave TodayСегодня увольнения не будетসোভিয়েত ইউনিয়ন৪৬ মিনিটছাত্র থাকাকালীন
১৯৬১দ্য স্ট্রিমরোলার অ্যান্ড দ্য ভায়োলিনThe Steamroller and the ViolinКаток и скрипкаসোভিয়েত ইউনিয়ন৪৬ মিনিটছাত্র থাকাকালীন
১৯৬২ইভান’স চাইল্ডহুডIvan’s ChildhoodИваново детствоসোভিয়েত ইউনিয়ন৯৫ মিনিট
১৯৬৬অ্যান্দ্রেই রুবলভAndrei RublevАндрей Рублёвসোভিয়েত ইউনিয়ন২০৫ মিনিট
১৯৭২সোলিয়ারিসSolarisСолярисসোভিয়েত ইউনিয়ন১৬৬ মিনিট
১৯৭৫মিররMirrorЗеркалоসোভিয়েত ইউনিয়ন১০৮ মিনিট
১৯৭৯স্টাকারStalkerСталкерসোভিয়েত ইউনিয়ন১৬১ মিনিট
১৯৮২ভয়েজ ইন টাইমVoyage in TimeTempo di Viaggioইতালি৬৩ মিনিটপ্রামাণ্য চিত্র
১৯৮৩নস্টালজিয়াNostalghiaNostalghiaইতালি১২৫ মিনিট
১৯৮৬দ্য স্যাকরিফাইসThe SacrificeOffretসুইডেন১৪৯ মিনিট
Andrei Tarkovsky Film List

Table of Contents

Share This Article
1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is Free!!